কাক ও কোকিল উভয়ের গায়ের রং কালো চেহারার মিল থাকলেও ব্যবহার ও কন্ঠে এদের মধ্যে প্রচুর পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।
কোকিলের মিষ্টি কন্ঠস্বর সবাইকে মুগ্ধ করে, কাকের কণ্ঠস্বর শোনা মাত্রই লোকে তাকে তাড়া করে। কোকিলের মায়া-মমতা খুব কম এরা অনেক চালাক পাখি। বাংলাদেশে এমন মানুষ খুবই কম পাওয়া যাবে যারা কাকু কোকিলকে চেনে না এদের ব্যবহার সম্পর্কে জানেনা। কাক মহিলা খাবার খেতে বেশি পছন্দ করে যেখানে ময়লা-আবর্জনা দেখা যায় সেখানেই কাক বেশি দেখা যায়। কোকিলকে অবশ্যই বসন্তের সময় বেশি দেখা যায়। বসন্তের দুপুরে অবসর সময়ে কোকিলের মিষ্টি কন্ঠস্বর শুনতে বড় ভালো লাগে। কোকিল পাখি গুলো সাধারণত অলস এরা বাসা বানাতে পারে না। অন্যের ভাষাকে ক্ষণিক সময়ের জন্য সে নিজের করে নেয়।
অন্যের বাসায় লাটিম পারে এভাবে এদের বংশ বিস্তার হয়ে থাকে। এমনই একদিন একটা কোকিলের ডিম পাড়ার সময় হল সে ডিম পাড়ার জন্য কোকিলটা খুঁজতে লাগল কাকের বাসা। খুঁজতে খুঁজতে অবশেষে একটা কাকের বাসা দেখতে পেল কিন্তু তার মনে খুব ভয় যদি কাক দেখতে পায় তবে তা রক্ষা নেই। যেই কথা সেই কাজ প্রবাদে আছে যেখানে বাঘের ভয় সেখানে রাত পোহায়। কাকে বাসায় কাছে যেতেই কোথা থেকে যেন এক টাকা করে আসলো। কোকিল কে তার বাসার কাছে দেখতে পেয়ে কোকিলের উদ্দেশ্য বুঝতে আর বাকী রইল না কাকের। সঙ্গে সঙ্গে কাকে তার কণ্ঠস্বর দিয়ে কা-কা করে ডাকতে লাগল কাকের ডাক শুনে মুহূর্তের মধ্যে সেখানে আরো দু'তিনটি কাক উড়ে আসলো। সবাই মিলে কোকিলটি কে তাড়া করল, কোকিল টাকাগুলোর ভয়ে ছুড়তে লাগল। কোকিলটি উড়ে পালাবার সময় তার সঙ্গিনীকে একটি গাছে বসা দেখতে পেল কিন্তু সে ডিম পাড়া কোকিল টা কে সাহায্য করতে এগিয়ে এলো না। ডিম পাড়া কোকিল টির খুবই খারাপ অবস্থা তাকে কাক গুলো বেহাল দশা করে ফেলেছে। কাকগুলো হাত থেকে এবারে মতো কোনো রকম রেহাই পেয়েছে কোকিলটি। কিন্তু ডিম পাড়া কোকিলের চিন্তা আর দূর হয় না তাকে তো ডিম পাড়তে হবে যে করেই হোক।
কোকিলটার ছুটতে ছুটতে খিদে পেয়েছে বেশ, ডিম পাড়া কোকিলটা খুঁজতে খুঁজতে কিছু খাদ্য পেল কোকিল খাবার যখন মুখে দেবে ঠিক তখন সে সময় তার সঙ্গিনী এসে হাজির রীতিমতো খাবারে ভাগ নিল। ডিম পাড়া কোকিলটি আবার ডিম পাড়ার জন্য কাকের বাসার দিকে গেল এখন দুপুর সময় এখন হয়তো কাকগুলো খাবার খোঁজে গেছে তাই আবার সে কাকের বাসায় গেল। সত্যি এখানে এখন কোন কাক নেই কোকিল মনে মনে খুব খুশী হলো। হঠাৎ করে এক টাকা কোথায় থেকে উড়ে আসলো এবং কোকিলকে তার বাসায় দেখতে পেল কোকিলটা ওকে দেখতে পেয়ে পাশে লুকিয়ে পরল। কোকিলটি লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতে লাগল কাকটি কি করে। বোকা কাক টি খুব রাগান্বিত হলো এবং নিজের টিমকে কোকিলের ডিম মনে করে ঠোঁট দিয়ে ঢুকাতে ঢুকাতে ভেঙে ফেলল। কোকিলটি কাকের কান্ড দেখে হাসতে লাগলো।
সেখান থেকে কোকিলটি পালিয়ে অন্য আরেকটি কাকের বাসা খুঁজতে লাগলো, খুঁজতে খুঁজতে অবশেষে এটা কাকের বাসা দেখতে পেল সে বাসায় কিছু ডিম দেখতে পেল কোকিলটা খুব খুশি হলো। কোকিলা কাকের একটামাত্র ডিম রেখে বাকি দিন গুলো ফেলে দিল। এরপর কোকিল কাকের বাসায় ডিম পারল।এমনই করে কাকের একটি ডিমের সঙ্গে কোকিলের ডিম থেকে বাচ্চা ফুটলো।
কাক কোকিলের ছানাগুলোকে নিজের মনে করে আদর যত্নে বড় করতে লাগলো, ছানাগুলো যখন উঠতে পারে তখন কোকিলের ছানাগুলো কাকের ছানা টা কে ঢোকাতে ঢোকাতে বাসা থেকে ফেলে দিল। এরপর কোকিলের ছানাগুলো কাকের বাসা থেকে পালিয়ে গেল আর কোনদিন ফিরলো না কাকের বাসায়।
1 Comments
Nice
ReplyDelete