গত দুইদিনের প্রবল বর্ষণে ফরিদপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের তথা পদ্মাচরের মানুষ। এতে বেশকিছু অঞ্চলের ফসলি জমি তলিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ফরিদপুরের চরমাধবদিয়া, ডিক্রীরচর, নর্থচ্যানেল, অম্বিকাপুরের নিম্নাঞ্চল এবং উপ-শহরের মডেল টাউনের রাস্তাঘাটসহ আশপাশের বাসা-বাড়িতে হাঁটুর উপর থেকে কোমর সমান জলাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষজন। গত ২ দিনের টানা বর্ষণে জনজীবন অনেকটা থমকে গেছে। তার সাথে হু হু করে বাড়ছে পদ্মার পানি। টানা থেমে থেমে এমন বর্ষণ চলতে থাকলে প্লাবিত হবে আরো অনেক নিচু এলাকা।
চরমাধবদিয়া ও নর্থচ্যানেল এলাকার পাটের ক্ষেতে প্রায় কোমর আবার কোথাও বুক সমান পানিতে ডুবে গেছে শত শত বিঘা জমি। পদ্মায় আসছে উজানের পানি। প্রবল বর্ষণে চরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় অসময়ে পাট কাটতে বাধ্য হচ্ছে চাষিরা।
কিছুদিন আগেও প্রচণ্ড খরার মুখে পড়ে সমস্ত পাটক্ষেত ফেটে চৌচির হয়েছিল। বহু পাট, তিল, তিষির ডাটা ও ঢেঁড়স ক্ষেত খরার মুখে পড়ে। এতে পদ্মাচরের সামন্য আয়ের মানুষদের বেশ ক্ষতি হয়। সেই ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার আগেই আবার ক্ষতির মুখে পড়লো অজপাড়া গাঁ ও পদ্মাচরের কৃষকরা। এছাড়া করোনার কারণে মিলছে না শ্রমিক।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহ এলাকার শ্রমিকরা ফরিদপুর অঞ্চলে আসতে পারছে না। ফলে শ্রমিকের খুব সঙ্কট দেখা দিয়েছে। যদিও অল্পসংখ্যক শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে, তাদের কাজের মজুরি প্রায় ৩ গুণ। পাশাপাশি শ্রমিকদের তিনবেলা খাবার দেয়ার জন্য সময়মতো মিলছে না কাঁচাবাজার। চর এলাকার হাজার হাজার বিঘা সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে বন্যার পানিতে।
অল্প সংখ্যক সবজি ক্ষেত শহররক্ষা বাঁধের কাছে থাকলেও বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় সেসব ক্ষেতও তলিয়ে গেছে। এতে চর এলাকার মানুষ তাদের নিজেদের সবজি ক্ষেতের সবজি দিয়ে নিজেদের প্রয়োজনটাও মেটাতে পাড়ছেন না।
অপরদিকে প্রবল বর্ষণে সালথা, নগরকান্দা, মধুখালী, আলাফাঙ্গা ও সদরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার একর পাটের ক্ষেত বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। ওইসব এলাকার কৃষকরাও প্রাণপণ চেষ্টা করছেন পাট কেটে পচানোর জন্য।
এটা কৃষকদের জন্য অসময়ে বিরাট একটা আর্থিক ক্ষতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
0 Comments